ইপিএস এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন Going Korea Through EPS (Employment Permit System) Bangla


ইপিএস এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন Full Guideline for Going Korea Through EPS (Employment Permit System) Bangla
Full Guideline for Going Korea Through EPS (Employment Permit System) Bangla


আলোচ্যসূচি


  1. ইপিএস (এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম) সংক্ষিপ্ত আলোচনা
  2. ইপিএস পরিচিতি
  3. কোরিয়ায় বিদেশি শ্রমিক (ঊ-৯) নির্বাচন ও আমদানি প্রক্রিয়া
  4. কোরিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের জন্য ইন্ডাস্ট্রি টাইপ পরিচিতি
  5. ইপিএস-টপিক (কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা)
  6. ইপিএস-টপিক উত্তীর্ণ ব্যাক্তির চাকরির আবেদন
  7. কোরিয়ান মালিক এবং বাংলাদেশী শ্রমিকের মধ্যে শ্রম চুক্তিপত্র (স্ট্যান্ডার্ড লেবার কন্ট্রাক্ট ) সম্পাদনা
  8. কোরিয়ার মালিকের সাথে শ্রমচুক্তি সম্পাদনকৃত শ্রমিকের  প্রিলিমিনারি ট্রেনিং
  9. কোরিয়ায় শ্রমিকের  প্রবেশ
  10. কোরিয়ার শ্রমিকের অধিকার ও কর্তব্য
  11. ইপিএসের প্রশ্ন ডাউনলোড


১. ইপিএস কি? 


কোরিয়ান সরকার তাদের শ্রম মন্ত্রণালয়ের এইচআরডি কোরিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার জন্য একটি সিস্টেম চালু করে যার নাম হল ইপিএস (এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম)। 


এই সিস্টেমের আওতায় ১৫টি দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া হচ্ছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মংগোলিয়া, কম্বোডিয়া, কিরজিগিস্তান, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ফিলিপিন, থাইল্যান্ড, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম, চীন এবং ইস্ট-তিমুর। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার জন্য কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি (MOU-Memorendum of Understanding) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ অব্যাহত রয়েছে। 


উল্লেখ্য, চুক্তি অনুযায়ী একমাত্র বোয়েসেলই এইচআরডি কোরিয়ার সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে কর্মী প্রেরণ করতে পারবে। অন্যকোন এজেন্ট বা কোম্পানী বা সংস্থা কোনভাবেই কোরিয়ায় শ্রমিক প্রেরণ করতে পারবেনা। এইকথা অনেক সময় শুনা যায় যে, অনেকেই ৭/৮ লাখ টাকার বিনিময়ে কোরিয়ার আসার সুযোগ করে দিবে/দিতে পারে। এই ধরণের সকল তথ্যই ভূয়া।


ইপিএসে স্বল্প খরচে কোরিয়া এসে কোরিয়ানদের সমান বেতন নিয়ে কাজ করতে পারার সুযোগ থাকায় বাংলাদেশে ইতিমধ্যে প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইপিএসে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে কোরিয়া আসা পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার টাকার মত খরচ হতে পারে। 


ইন্টারনেট রেজিস্ট্রেশন 


ইপিএস সিস্টেমে কোরিয়া আসতে হলে কোরিয়ান ভাষা (ইপিএস-টপিক) পরীক্ষায় পাস করে আসতে হয়। কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আগ্রহীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় লটারীর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে কারা পরীক্ষা দিতে পারবেন তা নির্বাচন করা হয় (এই নিয়ম পরিবর্তনশীল)। 


অর্থাৎ প্রথমে সবাই ইন্টারনেটে আবেদন করতে পারলেও কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষাটি দিতে পারবেন শুধু যারা লটারীতে ঠিকবেন। বোয়েসেল এবং এইচআরডি কোরিয়া কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। বিজ্ঞপ্তিটি বেশকিছু জাতীয় দৈনিকসহ বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে। 


যারা আবেদন করতে চান তাদের যেসব প্রাথমিক যোগ্যতা থাকতে হবে তা হলঃ


- বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৯ বছর।

- মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট থাকতে হবে। 

- কখনো কোন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবেনা। 

- কোরিয়া থেকে যাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বা অবৈধভাবে ছিলেন তাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। 


উপরোক্ত যোগ্যতা থাকলে আপনি আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


ইন্টারনেটে আবেদনের পর আপনার প্রথম পরীক্ষা হল লটারী। লটারীতে আপনি ভাগ্যবান বলে বিবেচিত হলে যেসব প্রক্রিয়াগুলো আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে তা পর্যায়ক্রমে নিন্মে দেওয়া হলঃ


বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে রেজাল্ট অনুযায়ী আপনি নির্বাচিত হলে বোয়েসেল নির্ধারিত পে-অর্ডার করে বোয়েসেলে জমা করলে চুড়ান্ত রেজিস্ট্রেশনের জন্য আপনার দেওয়া তথ্য এবং কাগজপত্র অনুযায়ী এইচআরডি কোরিয়ার সার্ভারে আপলোড করা হবে।


কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা 


লটারীতে নির্বাচিত হওয়ার পর চুড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে আপনাকে বোয়েসেলের দেওয়া নির্ধারিত সময়ানুযায়ী কোরিয়ান ভাষার পরীক্ষা দিতে হবে। 


পরীক্ষা হবে লিসেনিং (২৫টি প্রশ্ন) এবং রিডিং (২৫টি প্রশ্ন) এর উপর। ইপিএসের ওয়েবসাইটে প্রশ্নব্যাংক ডাউনলোড করার সুযোগ আছে। বেসিক কোরিয়ান শিখে যে কেউ ঐ প্রশ্নব্যাংক ভালভাবে সমাধান করলে পাশ করার সম্ভাবনা আছে। নিজের প্রচন্ড আগ্রহই একমাত্র আপনাকে পাশ করাতে পারে।


ইপিএস পরীক্ষা দেওয়ার পর ইপিএসের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনি পাশ করেছেন কিনা। ইপিএস পরীক্ষার রেজাল্টের মেয়াদ থাকবে দুই বছর।


চাকরির আবেদন এবং কোরিয়া যাত্রা

ইপিএসে পাশ করলেই কোরিয়া যাওয়া নিশ্চিত নয়। এই কথাটা ভালভাবে মনে রাখতে হবে। ইপিএস-টপিক পরীক্ষায় পাস করলে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বোয়েসেল আবেদনের জন্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে দিবে। এক্ষেত্রে বোয়েসেলের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখতে হবে এবং তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। চাকরির আবেদনের পর নাম জব রোস্টার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। রোস্টার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর যেকোন সময় চাকরির ডাক আসতে পারে। এইচআরডি’র তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলো রোস্টার তালিকা থেকে বিদেশী শ্রমিক পছন্দ করে। রোস্টার তালিকায় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সংখ্যক প্রার্থী থাকে বলে অনেক সময় অনেকেই বাদ পড়ে যেতে পারেন বা নিয়োগ পেতে দেরী হতে পারে। কোন কোম্পানী যখন বিদেশী শ্রমিকের চাহিদাপত্র দেয় তখন জব রোস্টার তালিকা থেকে তিনগুন শ্রমিকের তালিকা দেওয়া হয়। ঐ তালিকা থেকে যেসব শ্রমিককে নির্বাচন করা হয় তাদের জন্য এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ইস্যু করা হয়। কোন কোম্পানী যদি আপনাকে পছন্দ করে তবে নিয়োগপত্র আপনার কাছে পাঠাবে যা আপনি পুরণ করে বোয়েসেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিবেন। উক্ত নিয়োগপত্রে আপনার চুক্তির বিস্তারিত থাকবে(বেতনভাতা, কর্মস্থল, ছুটি, ডিউটি-টাইম, চুক্তির মেয়াদ ইত্যাদি)।


আপনার নিয়োগকর্তা আপনার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট, শ্রমচুক্তিপত্র দাখিলপূর্বক সিসিভিআই (সার্টিফিকেট ফর কানফার্মেশন অব ভিসা ইস্যুয়েন্স) এর জন্য আবেদন করলে আইন মন্ত্রণালয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সিসিভিআই ইস্যু করবে।


নিয়োগকর্তা সিসিভিআই বাংলাদেশে পাঠালে বোয়েসেল কোরিয়ান দূতাবাস থেকে ভিসার ব্যবস্থা করবে। অনেক সময় আপনাকে সাক্ষাতকারের জন্য দূতাবাসে যেতে হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাওয়া লাগে না। কোরিয়ায় যাওয়ার আগে আপনাকে ১ সপ্তাহের নির্ধারিত ট্রেনিং নিতে হবে এবং কোরিয়ায় পৌঁছানোর পর ন্যূনতম ২০ ঘন্টা ট্রেনিং নিতে হবে। এসব ট্রেনিংয়ে কোরিয়ান ভাষা, সংস্কৃতি, কাজের পরিবেশ, কোরিয়াতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।


ট্রেনিং শেষে আপনি আপনার কর্মস্থলে যোগদান করবেন।


ইপিএসে কোরিয়া আসার ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে বোয়েসেলের প্রত্যেকটি নির্দেশনা মেনে চলা উচিত।



২. ইপিএস পরিচিতি

  • দেশি শ্রমিক পাচ্ছেনা এমন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বৈধভাবে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগদানে অনুমোদন দেয়ার সিস্টেম হল ইপিএস (বিদেশি শ্রমিক আমদানি ও ব্যবস্থাপনা সরকার বা সরকারি প্রতিষ্ঠান করে থাকে)

দেশি শ্রমিকের চাকরির সুযোগ নিশ্চিত রেখে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ


  • কোরিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা, দেশি শ্রম বাজার এবং শ্রমিকের চাহিদা ও সরবরাহের প্রবণতা বিবেচনায় নিয়ে প্রত্যেক বছর বিদেশি শ্রমিক আমদানির কৌটা নির্ধারন করা হয়।
  • অনুর্ধ্ব ৩০০জন নিয়মিত শ্রমিক আছে এমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ম্যানুফেকচারিং শিল্প, কৃষি ও পশুপালন শিল্প, মৎস শিল্প, নির্মান শিল্প প্রভৃতি শ্রমিক ঘাটতি আছে এমন শিল্প সেক্টরে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে অনুমোদন।

উভয় দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, সরকারি প্রতিষ্ঠান (জব সেন্টার ও এইছ আরডিকোরিয়া) শ্রমিক নির্বাচন ও আমদানির কার্য নির্বাহ করে।


  • কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত শ্রমিক বাছাই সম্ভব।
  • কাজের দক্ষতা ও কোরিয়ান ভাষায় পারদর্শিতা সম্পন্ন উপযুক্ত শ্রমিক নির্বাচন

বিদেশি শ্রমিকের মানবাধিকার সংরক্ষন


  • প্রমিত শ্রম আইন, সর্বনিম্ন বেতন আইন, শিল্প নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য আইন সহ আন্যান্য শ্রম সম্পর্কিত আইন দেশি শ্রমিকের সমানভাবে প্রযোজ্য হয়।


৩. বিদেশি শ্রমিক (ঊ-৯) নির্বাচন ও আমদানি প্রক্রিয়া

আমদানি কৌটা ও প্রেরণকারী দেশ নির্বাচন সহ গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ


  • বিদেশি জনশক্তি নীতি কমিটি (প্রধানমন্ত্রির কার্যালয়ের অধীন) তে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত। - বিদেশি শ্রমিক আমদানি কৌটা ও কি ধরণের শিল্প সেক্টরে নিয়োগ দেয়া যাবে, প্রেরণকারী দেশ নির্বাচন সহ বিদেশি শ্রমিক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

শ্রমশক্তি রপ্তানি সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর (কোরিয়ান সরকার ↔ রপ্তানিকারী সরকার )


  • রপ্তানি প্রক্রিয়ায় দূর্নিতি রোধে উভয় সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর ।
  • সমঝোতা স্মারক মেনে চলা হচ্ছে কিনা নিয়মিত পর্যবেক্ষনপূর্বক সমঝোতা স্মারক নবায়নের সিদ্ধান্ত

চাকরি প্রত্যাশি বিদেশি শ্রমিকের জবরোস্টার প্রস্তুত (প্রেরণকারী দেশের সরকার ↔ কোরিয়ান সরকার)


  • প্রেরণকারী সরকার (সরকারি প্রতিষ্ঠান) নৈর্বক্তিক মানদণ্ড যেমন- কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় প্রাপ্ত নাম্বার, কাজের দক্ষতা, প্র্যাকটিকেল টেস্টের ফল, অভিজ্ঞতা ইত্যাদির মাধ্যমে প্রেরণযোগ্য শ্রমিকের তালিকা (আমদানি কৌটার নির্দিষ্ট কয়েকগুন) তৈরী করবে ।
  • প্রেরণকারী সরকার জবরোস্টার তৈরি করে পাঠালে এইছআরডি কোরিয়া ডাটা পরীক্ষাপূর্বক সে রোস্টারভুক্তদেরকে অনুমোদন দেয়।

বিদেশি শ্রমিক নির্বাচন ও এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ইস্যূ (নিয়োগকারী ↔শ্রম মন্ত্রনালয়)


  • দেশি শ্রমিকের চাকরির সুযোগ নিশ্চিতকরনের স্বার্থে নিয়োগকারী জব সেন্টারের মাধ্যমে দেশি শ্রমিক নিয়োগের চেষ্টা (৩-৭ কার্য দিবস) সত্তে¡ও ব্যর্থ হলে এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারে।
  • জব সেন্টার বর্তমান জবরোস্টার থেকে নিয়োদকারীর শর্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রমিকের তালিকা (তিনগুন) প্রস্তাব করবে।
  • নিয়োগকারী প্রস্তাবিত তালিক থেকে কোন শ্রমিককে নির্বাচন করলে সে শ্রমিকের জন্য এমপ্লয়মেন্ট পারমিট ইস্যু হয়।

শ্রমচুক্তি সম্পাদন (নিয়োগকারী ↔ বিদেশি শ্রমিক)


  • নিয়োগকারী তার নির্বাচিত শ্রমিকের সাথে প্রমিত শ্রম চুক্তিপত্র অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড লেবার কন্ট্রাক্ট ফর্মের মাধ্যমে শ্রমচুক্তি সম্পাদন করবে। (চুক্তিতে বেতন-ভাতা, ডিউটি টাইম, ছুটি, কর্মস্থল, শ্রমশর্ত, চুক্তির মেয়াদ প্রভৃতি স্পষ্ট উলে­খ থাকবে)

সার্টিফিকেট ফর কনফার্মেশন অব ভিসা ইস্যূয়েন্স (নিয়োগকারী ↔ আইন মন্ত্রনালয়)


  • নিয়োগকর্তা এমপ্লয়মেন্ট পারমিট, শ্রমচুক্তিপত্র দাখিলপূর্বক সার্টিফিকেট ফর কনফার্মেশন অব ভিসা ইস্যূয়েন্স (সিসিভিআই) এর জন্য আবেদন করলে নিরীক্ষাপূর্বক আইন মন্ত্রনালয় সিসিভিআই ইস্যু করবে।

বিদেশি শ্রমিকের কোরিয়ায় প্রবেশ(নিয়োগকারী ↔ শ্রমিক)


  • মালিক শ্রমিকের কাছে সিসিভিআই পাঠাবে এবং শ্রমিক তা নিয়ে কোরিয়ান দূতাবাস থেকে ভিসা (ঊ-৯) নিয়ে কোরিয়ায় আসবে।
  • প্রবেশের পর ন্যূনতম ২০ঘন্টা এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং নিবে।

বিদেশি শ্রমিকের চাকরি ব্যবস্থাপনা (শ্রম মন্ত্রনালয়)বিদেশি শ্রমিকের বসবাস ব্যবস্থাপনা (আইন মন্ত্রনালয়)


  • বিদেশি শ্রমিকের কর্মস্থলে শ্রমপরিদর্শন (শ্রম মন্ত্রনালয়)
  • পরামর্শ ও বিনামূল্যে শিক্ষা সেবা (শ্রম মন্ত্রনালয়, এইছআরডি কোরিয়া, শিল্প সেক্টর ভিত্তিক এনজিও)
  • কোম্পানি অস্থায়ি বা স্থায়ি বন্ধ, বেতন বকেয়া বা অনিবার্য কারন বশতঃ কোম্পানি পরিবর্তন অনুমোদন (শ্রম মন্ত্রনালয়)
  • অভিবাসন ব্যবস্থাপনার প্রশাসন কঠোরকরণ, আইন মন্ত্রনালয় ও শ্রম মন্ত্রনালয়ের সম্মিলিত কার্যক্রমের মাধ্যমে কঠোর বসবাস ব্যবস্থাপনা ।



৪. ইন্ডাস্ট্রি টাইপ পরিচিতি

  • ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি
  • কনস্ট্রাকশন বা নির্মান শিল্প
  • মৎস চাষ বা ফিশ ফার্মিং শিল্প
  • কৃষি ও পশু পালন শিল্প


ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি


সংজ্ঞা


  • কৃষি, মৎস বা অন্যান্য প্রাথমিক শিল্প থেকে প্রাপ্ত কাঁচামাল ব্যবহার করে নতুন আকারের বা বৈশিষ্টের দ্রব্য প্রস্তুত করার শিল্পকে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প বলা হয় ।

কাজের বিবরণ


  • বিদেশি শ্রমিকরা প্রধানত খাদ্য দ্রব্য, তামাক প্রক্রিয়াকরন, কাঠ প্রক্রিয়াকরন বা কাঠজাত দ্রব্য উৎপাদন, কাগজ উৎপাদন বা কাগজ প্রক্রিয়াকরন, সিনথেটিক/পেট্রোলিয়াম/কয়লা/রাবার/প্লাস্টিক জাত দ্রব্য উৎপাদন,খনিজ জাত দ্রব্য উৎপাদন, প্রাথমিক লোহা শিল্প, মেটাল পার্টস সংযোজন/ মেশিন/ টুলস উৎপাদন ইত্যাদি ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে চাকরি করে থাকে, এবং যার যার কোম্পানির উৎপাদিত পন্যের বৈশিষ্ট অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে কাজ করতে হয় ।

কর্ম ঘন্টা


  • ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের ক্ষেত্রে সাধারনত সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ হয়। এবং অনেক ক্ষেত্রেই ১থেকে ৩ঘন্টা ওভার টাইম ডিউটি হয়। কোম্পানির বৈশিষ্ট অনুযায়ী ডিউটি টাইম কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদনের সময় শর্ত সমূহ দেখুন ।

বেতন


  • প্রমিত শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে । ওভারটাইম ভাতা, ছুটির দিনে কাজের ভাতা এবং কোম্পানিভেদে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অন্যান্য ভাতা দেয়া হয়।

অন্যান্য


  • বেতন পরিশোধের তারিখ, থাকা ও খাওয়ার সুবিধা দেয়া হবে কিনা ইত্যাদি কোম্পানি ভেদে ব্যাতিক্রম হতে পারে, তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদন করার সময় শর্তসমূহ দেখুন।

কনস্ট্রাকশন বা নির্মান শিল্প


সংজ্ঞা


  • নির্মান শিল্প বলতে বুঝায় ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন কাজের ফিল্ডে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন। এটি দু’ভাগে বিভক্ত, একটি সাধারণ কনস্ট্রাকশন শিল্প অন্যটি বিশেষ কনস্ট্রাকশন শিল্প

কাজের বিবরণ


  • বিদেশি শ্রমিকরা সাধারণত এয়ারপোর্ট নির্মান, রেল রোড নির্মান, নৌবন্দর নির্মান, পাওয়ার প্লান্ট নির্মানের কাজে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে কোম্পানির বৈশিষ্ট অনুযায়ী কাজ ভিন্ন হতে পারে।

কর্ম ঘন্টা


  • গ্রীষ্ম অর্থাৎ মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সকাল ৭টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত, শীত অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ডিউটি হয়। তবে কোম্পানির বৈশিষ্ট অনুযায়ী কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদনের সময় শর্ত সমূহ দেখুন ।

বেতন


  • প্রমিত শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে । ওভারটাইম ভাতা, ছুটির দিনে কাজের ভাতা এবং কোম্পানিভেদে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অন্যান্য ভাতা দেয়া হয়।

অন্যান্য


  • বেতন পরিশোধের তারিখ, থাকা ও খাওয়ার সুবিধা দেয়া হবে কিনা ইত্যাদি কোম্পানি ভেদে ব্যাতিক্রম হতে পারে, তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদন করার সময় শর্তসমূহ দেখুন।

মৎস চাষ বা ফিশ ফার্মিং শিল্প


সংজ্ঞা


  • মৎস চাষ শিল্প বলতে সমুদ্র, নদী, লেক বা খালে মাছ বা সামুদ্রিক প্রাণির পোনা উৎপাদন বা চাষ এবং সামুদ্রিক উদ্ভিদ চাষ করাকে বুঝায়

কাজের বিবরণ


  • সমুদ্র বা নদীতে সামুদ্রিক বা জলজ প্রাণি বা উদ্ভিদ চাষের কাজে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হয়। চাষ : মাছ চাষ, মুক্তা চাষ, সামুদ্রিক প্রাণী বা উদ্ভিদ চাষ

কর্ম ঘন্টা


  • সামুদ্রিক প্রানি ও উদ্ভিদের বৈশিষ্ট অনুযায়ী ডিউটি টাইম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তাই, শ্রমচুক্তি সম্পাদনের সময় শর্ত সমূহ দেখুন।. ※ উদাহরণ) ক কোম্পানির ডিউটি টাইম ৫টা থেকে ১৪টা খ কোম্পানির ডিউটি টাইম ৮টা থেকে ১৭টা

বেতন


  • প্রমিত শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে ওভারটাইম বা ছুটির দিনে কাজের অতিরিক্ত ভাতা পাওয়া যাবে কিনা তা প্রত্যেক কোম্পানির সাথে সম্পাদিত শ্রমচুক্তির শর্তের উপর নির্ভর করে।

অন্যান্য


  • বেতন পরিশোধের তারিখ, থাকা ও খাওয়ার সুবিধা দেয়া হবে কিনা ইত্যাদি কোম্পানি ভেদে ব্যাতিক্রম হতে পারে, তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদন করার সময় শর্তসমূহ দেখুন।

কৃষি ও পশু পালন শিল্প


সংজ্ঞা


  • কৃষি ও পশু পালন শিল্প বলতে জমিকে ব্যবহার করে মানব জাতির প্রয়োজনীয় প্রাণী বা উদ্ভিদ উৎপাদন করাকে বুঝায় ।

কাজের বিবরণ


  • বিদেশি শ্রমিকদেরকে শস্য উৎপাদন বা এ ধরণের কাজে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শস্য উৎপাদন : ফুল ও বাহারি গাছ চাষ, মাশরুম চাষ, ফল চাষ, শব্জি চাষ, বীজ উৎপাদন ইত্যাদি। পশুপালন : গরু-মহিষ, শুকর, ঘোড়া, মোরগ-মুরগি ইত্যাদি পালন কৃষি সম্পর্কিত সেবা : কৃষিপন্য বাছাই করন, শুকানো ও প্রক্রিয়াকরণ।

কর্মঘন্টা


  • কৃষি সেক্টরের ডিউটি টাইম ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরের মত গতানুগতিক নয়, বরং পরিবর্তনশীল। তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদনেরর সময় শর্তসমূহ দেখুন।
  • ডিউটি : ৯টা থেকে ১৮টা (১ঘন্টা বিশ্রাম সহ)
  • ব্যাতিক্রম : কৃষি সেক্টরে কোম্পানির বৈশিষ্ট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার ডিউটি টাইম প্রয়োগ হতে পারে।

বেতন


  • প্রমিত শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে ওভারটাইম বা ছুটির দিনে কাজের অতিরিক্ত ভাতা পাওয়া যাবে কিনা তা প্রত্যেক কোম্পানির সাথে সম্পাদিত শ্রমচুক্তির শর্তের উপর নির্ভর করে।

অন্যান্য


  • কৃষি সেক্টরে বেশির ভাগ কোম্পানি থাকা-খাওয়ার সুবিধা দিয়ে থাকলেও ক্ষেত্র বিশেষে ব্যাতিক্রম হতে পারে। তাই শ্রমচুক্তি সম্পাদনের সময় শর্ত সমূহ দেখুন।



৫. ইপিএস-টপিক (কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা)


ইপিএস-কেএলটিতে অংশগ্রহনের যোগ্যতা


  • যার বয়স ১৮ থেকে ৩৯ বছর
  • কারাবাস বা তার বেশি শাস্তিযোগ্য অপরাধের রেকর্ড নাই এমন ব্যাক্তি
  • কোরিয়ার সরকারি সংস্থা কর্তৃক যাকে কোন দিন কোরিয়া থেকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়নি বা কোরিয়ার বন্দর থেকে ফেরত(ডিপোর্টেশন)দেয়া হয় নি
  • বিদেশ ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা নাই এমন ব্যাক্তি
  • উভয় দেশের সরকার নির্ধারিত অন্যান্য যোগ্যতা যার আছে

ইপিএস-কেএলটি অনুষ্ঠান


  • সংশ্লিষ্ট দেশের কার্যকর জবরোস্টার এবং সে জব রোস্টার শেষ হওয়ার আনুমানিক সময়কে বিবেচনায় নিয়ে কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা নেয়া হয়।
  • আগাম বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পরীক্ষার সময়-সূচী ও বিস্তারিত বিষয়ে জানানো হয় ।

ইপিএস-কেএলটি’র প্রশ্ন


  • লিসেনিং কমপ্রিহেনশন পার্টে ২৫টি প্রশ্ন এবং রিডিং কমপ্রিহেনশন পার্টে ২৫টি প্রশ্ন (পরীক্ষার সময় ৭০মিনিট)
  • ইপিএস-কেএলটি’র উম্মুক্ত প্রশ্ন ব্যাংক : ডাউনলোড লিঙ্ক https://eps.hrdkorea.or.kr/main/intro.do 

উত্তীর্ণকারীর নাম ঘোষণা


যে ভাবে ঘোষণাকরা হবে


  • পরীক্ষার পর নির্ধারিত তারিখে ওয়েবপেইজ এর মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে ※ হোমপেইজ ঠিকানা : https://eps.hrdkorea.or.kr/epstopik/epsHomeIndex.jsp 
  • সংশ্লিষ্ট দেশের সেন্ডিং এজেন্সির নোটিশবোর্ডে প্রকাশ করা হবে
  • পাশের মানদন্ড : পূর্ণমান ২০০’র মধ্যে ৮০নাম্বারের বেশি পাওয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধা তালিকার ভিত্তিতে দেশভিত্তিক নির্ধারিত সংখ্যক প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করানো হবে।
  • ইপিএস-কেএলটি উত্তীর্ণতার মেয়াদ : উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে ফল ঘোষণার দিন থেকে ২বছর পর্যন্ত উত্তীর্ণ ধরা হবে

অন্যান্য


ইপিএস-কেএলটিতে উত্তীর্ণ ব্যাক্তি জব রোস্টারে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলেও কোনভাবেই কোরিয়ায় চাকরি পাওয়া সম্পূর্ণ নিশ্চিত নয়।

※ দেখুন (সংক্ষিপ্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া )

১. ইপিএস-কেএলটি উত্তীর্ণ

২. চাকরির আবেদন

৩. রোস্টার অনুমোদন ও রোস্টারে অন্তর্ভূক্তি

৪. রোস্টার থেকে শ্রমিক পছন্দ(র‌্যানডম পদ্ধতি)

৫. নিয়োগ



৬. ইপিএস-টপিক উত্তীর্ণ ব্যাক্তির চাকরির আবেদন

আবেদনের যোগ্যতা


  • যার বয়স ১৮ থেকে ৪০বছর
  • ইপিএস-কেএলটিতে উত্তীর্ণ ব্যাক্তি
  • কোরিয়ান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মানদন্ডে মেডিক্যাল চেকআপে উত্তীর্ণ ব্যাক্তি
  • কারাবাস বা তার বেশি শাস্তিযোগ্য অপরাধের রেকর্ড নাই এমন ব্যাক্তি
  • কোরিয়ার সরকারি সংস্থা কর্তৃক যাকে কোন দিন কোরিয়া থেকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়নি বা কোরিয়ার বন্দর থেকে ফেরত(ডিপোর্টেশন)দেয়া হয় নি * চাকরির আবেদনকারীর অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে

চাকরির আবেদনের পদ্ধতি


  • কোরিয়ান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরম নির্ভুলভাবে পূরন করে উভয় সরকারের স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে নির্ধারিত সেন্ডিং এজেন্সিতে জমা দিতে হবে।

চাকরির আবেদনের সময়সীমা


  • ইপিএস-কেএলটি উত্তীর্ণতার মেয়াদ (২বছর)এর মধ্যে আবেদনপত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র সেন্ডিং এজেন্সিতে জমা দিতে হবে। 
  • ইপিএস-কেএলটি উত্তীর্ণতার মেয়াদ (২বছর)অতিক্রান্ত হলে আবার নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।

চাকরির আবেদন কার্যকারিতার মেয়াদ : রোস্টার অনুমোদনের দিন থেকে ১বছর


  • তবে ইপিএস-কেএলটি উত্তীর্ণতার মেয়াদের (২বছর) মধ্যে রোস্টারে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর ১বছরের মধ্যে চাকরি না পেয়ে থাকলে আবার রোস্টারে অন্তর্ভূক্ত হওয়া যাবে।

সতর্কতার বিষয়


  • এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমে নিয়োগদাতা জবরোস্টার থেকে তার পছন্দের শ্রমিককে নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাই রোস্টারে অন্তর্ভূক্ত হওয়টা ১০০% চাকরির নিশ্চয়তা বহন করে না।


৭. কোরিয়ান মালিক এবং বাংলাদেশী শ্রমিকের মধ্যে শ্রম চুক্তিপত্র (স্ট্যান্ডার্ড লেবার কন্ট্রাক্ট ) সম্পাদনা


প্রমিত শ্রমচুক্তিপত্র (স্ট্যান্ডার্ড লেবার কন্ট্রাক্ট )


মালিক ও শ্রমিক শ্রমচুক্তি করার সময় প্রমিত শ্রমচুক্তিপত্র ব্যবহার করতে হবে


চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু

  • - চুক্তির মেয়াদ
  • - কর্মস্থল ও কাজের বিবরণ
  • - কর্মঘন্টা, বিশ্রাম, ছুটির দিন
  • - বেতন-ভাতা, বেতন প্রদানের তারিখ ও কিভাবে দেয়া হবে
  • - এ ছাড়াও মালিক ও শ্রমিক পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে যে সব শ্রমশর্ত নির্ধারন করতে পারবে তার বিবরন
  • শিক্ষানবিশ (প্রবেশন) হিসেবে ৩মাস রাখা যাবে। সত্যিকারে কাজ আরম্ভের দিন থেকে প্রবেশন পিরিয়ড গনণা শুরু হবে। শিক্ষানবিশকালে ঘন্টা প্রতি ন্যূনতম বেতনের ১০% বাদ দিয়ে বাদবাকি টাকা প্রদান করতে হবে।
  • শ্রমচুক্তির কার্যকারিতা শুরু হবে শ্রমিক কোরিয়ায় প্রবেশের দিন থেকে

শ্রমচুক্তি কি ভাবে সম্পাদন করা হবে


  • কোরিয়ার মালিক কোন বিদেশি শ্রমিককে নির্বাচন করলে এইছআরডি কোরিয়া সেন্ডিং এজেন্সির কাছে সে শ্রমিকের নামে শ্রমচুক্তি পাঠাবে
  • সেন্ডিং এজেন্সি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে চুক্তির বিষয়বস্তু বর্ণনা করে চুক্তিতে সম্মত কিনা জিজ্ঞেস করে তা এইছআরডি কোরিয়াকে জানাবে

শ্রমচুক্তি সম্পাদনের সময় সতর্কতার বিষয়


  • শ্রমচুক্তি সম্পাদনের পর শ্রমিক দায়ী এমন কারনে চুক্তিটি বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ১ বছরের জন্য জব রোস্টারের বাইরে থাকবে
  • শ্রমচুক্তিতে সম্মতি না থাকলে শ্রমিক ১বার চুক্তি প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। তবে এর পর আবার প্রত্যাখ্যান করলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের নাম ১ বছরের জন্য জব রোস্টারের বাইরে থাকবে


৮. কোরিয়ার মালিকের সাথে শ্রমচুক্তি সম্পাদনকৃত শ্রমিকের  প্রিলিমিনারি ট্রেনিং


প্রিলিমিনারি ট্রেনিং কাকে নিতে হবে


  • কোরিয়ার মালিকের সাথে শ্রমচুক্তি সম্পাদনকৃত বিদেশি শ্রমিককে প্রিলিমিনারি ট্রেনিং নিতে হবে


প্রিলিমিনারি ট্রেনিং কত ঘন্টা নিতে হবে


  • শ্রমচুক্তিতে প্রবেশন পিরিয়ড (শিক্ষানবিশকাল) যার নাই তাকে ৪৫ঘন্টা ট্রেনিং নিতে হবে


প্রিলিমিনারি ট্রেনিংয়ের বিষয়সমূহ


  • কোরিয়ান ভাষা
  • কোরিয়ান সংস্কৃতি
  • আন্ডারস্ট্যান্ডিং অব ইপিএস
  • বেসিক ট্রেনিং, যেমন- শিল্প নিরাপত্তা
  • ইন্ডাস্ট্রি টাইপ ভিত্তিক ট্রেনিং


প্রিলিমিনারি ট্রেনিং সেন্টার


  • প্রিলিমিনারি ট্রেনিং সেন্টার হতে হবে সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সরকারের মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান যা জাতীয় অর্থ-বাজেট দ্বারা পরিচালিত
  • শ্রমিক প্রেরণকারী দেশের পক্ষথেকে প্রস্তাবিত এবং কোরিয়ার শ্রম মন্ত্রনালয় কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান



৯. কোরিয়ায় প্রবেশ


সিসিভিআই (সার্টিফিকেট ফর কনফার্মেশন অব ভিসা ইস্যূয়েন্স) ও ভিসা


  • কোরিয়ার মালিকের সাথে শ্রমচুক্তি সম্পাদনকৃত শ্রমিকের নামে সিসিভিআই ইস্যুর জন্য আবেদন করার পর, কোরিয়ার আইন মন্ত্রনালয় (ইমিগ্রেশন)কর্তৃক নিরীক্ষার পর সিসিভিআই ইস্যূ হয়
  • সিসিভিআই ইস্যুকৃত শ্রমিক সেন্ডিং এজেন্সির মাধ্যমে সে দেশে অবস্থিত কোরিয়ান দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবে

কোরিয়ায় প্রবেশের সময়-সূচী নির্ধারন


  • এইছআরডি কোরিয়া ভিসা প্রাপ্ত শ্রমিকের কোরিয়ায় প্রবেশের তারিখ নির্ধারন করে দেয়ার পর শ্রমিক বিমানের টিকেট কিনবে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিবে
  • কোরিয়ায় প্রবেশের তারিখ নির্ধারিত হওয়া শ্রমিক ডিপার্টচারের আগে সম্পাদনকৃত শ্রমচুক্তিপত্র ও মেডিক্যাল চেকআপ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবে

কোরিয়ায় প্রবেশ ও এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং


  • কোরিয়ায় প্রবেশের সময় সেন্ডিং এজেন্সি কর্তৃক সরবারহকৃত ইউনিফর্ম ও নেইমটেগ ব্যবহার করতে হবে।
  • এইছআরডি কোরিয়া কর্তৃক নির্ধারিত সময়-সূচী অনুযায়ী কোরিয়ায় প্রবেশকৃত শ্রমিক এইছআরডি কোরিয়ার নির্দেশনা মোতাবেক ইমিগ্রেশন ও অন্যন্য ফরমালিটি শেষ করে ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে।
  • শ্রমিক কোরিয়ায় প্রবেশের পর ন্যূতম ২০ঘন্টা (৩দিন ২রাত) ট্রেনিং নিবে


১০. অধিকার ও কর্তব্য


আইনগত অধিকার

শ্রম সম্পর্কিত আইন প্রয়োগ


  • প্রমিত শ্রম আইন, ন্যূনতম বেতন আইন, শিল্প নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য আইন ইত্যাদি কোরিয়ান শ্রমিকের সমভাবে প্রয়োগ হয়।
  • মালিক শ্রমচুক্তি ভঙ্গ করলে, অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করলে, বেআইনী বা অন্যায় আচরন করলে ওয়ার্কিং কন্ডিশন ই¤প্র“ভমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এবং লেবার কমিশন-এ অধিকার সংরক্ষন বা প্রতিকার পাওয়া যায়।
  • তবে গার্হস্থ্য সেবা বা ব্যাক্তিগত সেবার কাজে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রে শ্রম সম্পর্কিত আইন প্রযোজ্য নয়। (কোরিয়ান ও বিদেশি শ্রমিক উভয়ের ক্ষেত্রে একই)
  • অধিকন্তু, কৃষি ও পশুপালন এবং ফিশারি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ডিউটি টাইম, ছুটির দিন, অবসর সংক্রান্ত প্রমিত শ্রম আইন প্রযোজ্য নয়। (কোরিয়ান ও বিদেশি শ্রমিক উভয়ের ক্ষেত্রে একই)

প্রমিত শ্রম আইন বা লেবার স্ট্যান্ডার্ড অ্যাক্ট

  • - ডিউটি টাইম হবে সপ্তায় ৪০(৪৪)ঘন্টা, ১দিনে ৮ঘন্টা, মালিক-শ্রমিকের সম্মতিতে ওভারটাইম বা ছুটির দিনে ডিউটি হতে পারে।
  • - প্রতি মাসে ন্যূনতম এক বার শ্রমচুক্তিতে উলে­খিত তারিখে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বা নগদে নিয়মিত বেতন পরিশোধ হবে।
  • - বিদেশি শ্রমিক ওভার টাইম ডিউটি, নাইট ডিউটি (২২টা থেকে ৬টা), ছুটির দিনে কাজ করলে অতিরিক্ত ভাতা পাবে। (৪জনের কম শ্রমিক আছে এমন কোম্পানিতে প্রযোজ্য নয়)
  • - বিদেশি শ্রমিক একই কোম্পানিতে ১ বছরের বেশি চাকরি করলে অবসরভাতা পাবে। (৪জনের কম শ্রমিক আছে এমন কোম্পানিতে প্রযোজ্য নয়)

ন্যূনতম বেতন আইন বা মিনিমাম ওয়েজ অ্যাক্ট

  • বিদেশি শ্রমিকও আইনে নির্ধারিত সর্বনিম্ন বেতন বা তার অধিক পেতে পারে।

শিল্প দূর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ আইন বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকসিডেন্ট কম্পেনসেশন অ্যাক্ট

  • কোম্পানির কাজের সাথে সম্পর্কিত দূর্ঘটনা বা রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ভাতা, বিশ্রাম ভাতা, বিকলাঙ্গতা ভাতা, পোষ্যভাতা প্রভৃতি পাওয়া যায়।

সামাজিক বিমা প্রয়োগ


  • শিল্প দূর্ঘটনা বিমা, জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা, জাতীয় পেনশন (পারস্পরিকতার ভিত্তিতে প্রয়োগ) প্রভৃতি প্রয়োগ হয়।

বৈষম্যমূলক আচরন নিষিদ্ধ


  • আইনের ২২ধারা (বৈষম্য প্রতিরোধ)য় কেউ বিদেশি শ্রমিক হওয়ার কারনে যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় সে ব্যাপারে বিধান আছে। তাই কোরিয়ান ও বিদেশি শ্রমিকের মধ্যে বৈষম্য করা নিষেধ।
  • তবে বিদেশি শ্রমিকের দক্ষত বা সক্ষমতা ও উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী যৌক্তিক মাত্রায় বৈষম্য করা যাবে।

চাকরির মেয়াদ সম্পর্কিত বিধান


  • বিদেশি শ্রমিক কোরিয়ায় মোট ৩ বছর কাজ করতে পারবে, তবে এ সময়ে পরিবারের কোন সদস্যকে নিতে পারবে না। চাকরির মেয়াদ শেষে অবশ্যই দেশে ফেরত যেতে হবে এবং যাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ইপিএস এর মাধ্যমে পুনরায় কোরিয়ায় প্রবেশ করা যাবে না। (বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ আইন ধারা ১৮)
  • তবে, ইপিএস এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিক তার চুক্তির মেয়াদ ৩বছর শেষ হবার পর বর্তমান মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে পূনঃ নিয়োগের অনুমোদনের জন্য আবেদন করলে মাত্র এক বার অনুর্ধ্ব ২ বছরের জন্য তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। (বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ আইন ধারা ১৮-২)

আইনগত কর্তব্য


এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সম্পন্ন


  • বিদেশি শ্রমিক কোরিয়ায় প্রবেশের পর এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার পরিচালিত ট্রেনিং-এ অবশ্যই অংশগ্রহন করতে হবে।

মেডিক্যাল চেকআপ


  • বিদেশি শ্রমিক এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টারে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে হবে।
  • মেডিক্যাল চেকআপ-এ উনুত্তীর্ণ শ্রমিককে দ্বিতীয়বার আরো চেকআপ করা হবে, তাতেও উনুত্তীর্ণ হলে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

ইপিএস এর প্রধান ৪বিমা ক্রয়


  • বিদেশি শ্রমিক এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টারে অবস্থানকালে ইপিএস’র বাধ্যতামূলক বিমা পলিসির চুক্তিপত্র সম্পাদন করতে হবে।(রিটার্ন কস্ট ইন্স্যূরেন্স, ক্যাজুয়ালটি ইন্স্যূরেন্স)
  • - রিটার্ন কস্ট ইন্স্যূরেন্স হল স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করতে প্রয়োজনীয় খরচ(বিমানের টিকেট)নির্বাহের জন্য
  • - ক্যাজুয়ালটি ইন্স্যূরেন্স হল কোম্পানির কাজের সাথে সম্পর্ক নাই এমন দূর্ঘটনা ও রোগের ক্ষতিপূরনের জন্য ।

শ্রমচুক্তি নবায়ন ও ভিসার মেয়াদ বাড়ানো


  • শ্রমচুক্তির মেয়াদ শেষ হলে চুক্তি নবায়ন করতে হবে। এবং শ্রমচুক্তি নবায়নের পর আঞ্চলিক ইমিগ্রেশন অফিসে আবেদন করে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে হবে।

কোম্পানি পরিবর্তন


  • বিদেশি শ্রমিক কোরিয়ায় প্রবেশের পুর্বে যে কোম্পানির সাথে শ্রমচুক্তি সম্পাদন করেছিল সেখানেই কাজ শুরু করতে হবে।
  • বৈধ কারন ব্যাতিত প্রথম কোম্পানি ত্যাগ করে অন্য কোথাও কাজ করা যাবে না।
  • কোম্পানি পরিবর্তনের সুযোগ সীমাবদ্ধ ।


১১. ইপিএসের প্রশ্ন ডাউনলোড


https://www.eps.go.kr/eo/bdMain.eo?natNm=bd

https://www.eps.go.kr/eo/NatCntnSuppR.eo?natNm=bd&hiMenuId=607&menuId=622 




১২. বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন :


বাংলাদেশ কোরিয়ান স্টাডিজ ইনিশিয়েটিভ (বিকেএসআই)

অফিস: ১০৩, ৬ষ্ঠ তলা, মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্স

মিরপুর ১, ঢাকা - ১২১৬, বাংলাদেশ

মোবাইল: (+88) 01889174072



তথ্যসূত্রঃ


EPS(Employment Permit System)

বোয়েসেল

ইপিএস কি?